একাধারে তিনি স্ত্রী, মা ও শিক্ষিকা। এর বাইরেও তার বড় পরিচয় তিনি একজন নারী জনপ্রতিনিধি। সংসারের কাজ, সন্তানকে স্কুলে আনা-নেয়া, বাজার করা, চাকুরিস্থলে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে সারাদিন কর্মব্যস্ত সময় পার করতে হয় তাকে।
তবে কর্মব্যস্ততা আরও বেড়ে গেছে জনপ্রতিনিধি হওয়ার পর। এতো কিছু সামলানো যখন সম্ভব হচ্ছিল না ঠিক সে সময় নানা প্রতিবন্ধকতাকে দূরে ঠেলে স্বামীর অনুপ্রেরণায় এই নারী সিদ্ধান্ত নিলেন মোটর বাইক কেনার।
এরপর মাসখানেক আগে কিনে ফেললেন ১০০ সিসি একটি স্কুটি মোটর বাইক। প্রশিক্ষণ নিয়ে নেমে পড়লেন রাস্তায়। এখন সেই স্কুটি পাল্টে দিয়েছে এই নারী জনপ্রতিনিধির জীবন। বলছি পাবনার চাটমোহর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. ফিরোজা পারভীনের কথা।
কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে। তিনি জানালেন তার জীবনের নানা কথা। রান্না করা, মেয়েকে স্কুলে দিয়ে আসা, কলেজে যাওয়া এবং উপজেলা পরিষদে অফিস শেষে সাধারণ মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছানো সবকিছুই তিনি এখন অনায়াসে করছেন।
স্কুটির কারণে সময় বাঁচার পাশাপাশি কমেছে রাস্তাঘাটের ভোগান্তি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে এমএসএস করা এই নারী জনপ্রতিনিধি সদ্য শেষ হওয়া চাটমোহর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বিপুল ভোটে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
পাশাপাশি প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন। সকাল হলেই মাথায় হেলমেট পড়ে স্কুটিতে চেপে ছুটে যান তার কর্মস্থলে। এরপর ক্লাস শেষে বেড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের সাথে দেখা করতে-এমনটাই জানালেন এই নারী জনপ্রতিনিধি।
ফিরোজা পারভীন উপজেলার চরনবীণ হামিদা মমতাজ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে কম্পিউটার অপারেশন বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। স্বামী ইকবাল কবির রঞ্জু মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজের দর্শন বিষয়ের প্রভাষক এবং একটি জাতীয় দৈনিকের সংবাদ কর্মী।
বড় মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস বৃষ্টি ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজে নবম শ্রেণীতে পড়ে। ছোট মেয়ে হাসানাত ফেরদৌস পূণ্য চাটমোহর পৌর শহরের স্থানীয় একটি কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে।
ফিরোজা পারভীন বলেন, সাধারণ মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছেন তাদের সুখ-দুঃখে পাশে পাবার জন্য। যেটা আমি অন্য যানবাহনে চলাফেরা করতে গিয়ে পারতাম না। তাই স্বামীর অনুপ্রেরণায় স্কুটি কিনেছি। তবে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ এখনো কোনো নারীকে দুই চাকার যানের চালকের আসনে ভাবতে বা দেখতে ঠিক অভ্যস্ত নন। কিন্তু পরিবারের সম্মতি পেয়ে সাহস পেয়েছি। স্কুটি আমার জীবনকে সহজ করে দিয়েছে।
উপজেলা পর্যায়ের মতো জায়গায় আমি একজন নারী হয়ে মোটর বাইক চালিয়ে সব কাজ করছি এটা ভাবতে ভালো লাগছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্বামী প্রভাষক ইকবাল কবির রঞ্জু বলেন, এভাবেই একসময় নারীদের নানা প্রতিবন্ধকতা দূর হবে। বিভিন্ন কাজে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়লে দেশের জন্য মঙ্গল। তাকে দেখে অন্য কেউ উদ্বুদ্ধ হবে। এভাবেই পাল্টে যাবে দেশ। যে কারণে স্ত্রীকে অনুপ্রেরণা দিয়েছি এবং স্কুটি কিনে দিয়েছি বলে জানান তিনি।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | |
৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ |
১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ |
২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ |
২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |
আইটি সাপোর্ট ও ম্যানেজমেন্টঃ Creators IT Bangladesh
ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টঃ WebNewsDesign