পঞ্চাশ শয্যা বিশিষ্ট চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা চলছে জোড়াতালি দিয়ে। চিকিৎসক সংকটের কারণে নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে উপজেলার তিন লাখেরও অধিক মানুষের চিকিৎসা।
এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। কাঙ্খিত সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘদিন এমন অচলবস্থা চলে এলেও কোন মাথাব্যথা নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ভুক্তভোগীরা বলছেন, ‘হাসপাতাল এখন নিজেই রোগী’।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে চাপের মধ্যে থেকেও সাধ্য মতো সেবা দেয়া হচ্ছে। এতে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জরুরি ও বর্হি-বিভাগের সামনে রোগীদের দীর্ঘসারি। ইউএচও ডা. সবিজুর রহমান প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত। মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত আরএমও) ডা. স.ম. বায়েজীদ-উল ইসলামকে ইনডোর রোগী দেখা শেষে বর্হি বিভাগে একটানা বিকেল পর্যন্ত রোগী দেখতে হচ্ছে। ডা. পপি রানী কুন্ডু ও ডা. মুশফিকুর রহমানকে কখনও জরুরি বিভাগে আবার কখনওবা বর্হি বিভাগে রোগী দেখতে ছুটতে হচ্ছে।
মাত্র তিন জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চলছে জোড়াতালির স্বাস্থ্য সেবা। বাধ্য হয়ে জরুরী বিভাগে উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা (স্যাকমো) রোগীদের ব্যবস্থাপত্র লিখে দিচ্ছেন। আলট্রাসনোলজিস্ট না থাকায় আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। অথচ রোগীদের বাইরে থেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করতে হচ্ছে।
অপরদিকে হাসপাতালে সার্জারীর মেশিনগুলো দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। একটু জটিল রোগী এলেই রেফার্ড করা হচ্ছে পাবনা, রাজশাহী অথবা ঢাকায়। দুর-দুরান্তে চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে আর্থিক অপচয়সহ নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গড়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। সেখানে মেডিসিন, সার্জারী, গাইনী, শিশু, আর্থোসার্জারী, কার্ডিওলোজী, চক্ষু, নাক কান গলা,এ্যানেসথেসিয়া, চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞ’র মত গুরুত্বপূর্ণ পদ থাকলেও কোন চিকিৎসক নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন সাব সেন্টার মিলিয়ে ৩২ জন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও ২২টি পদ দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে।
এদিকে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অননুমোদিতভাবে অনুপন্থিত রয়েছেন ডা. অরুন্ধুতী কুন্ডু, ডা. আরিফা সুলতানা, ডা. মো. রাশেদুল হক খাঁন এবং ডা. গুলে তাসকিয়া। প্রত্যেকের নামে বিভাগীয় মামলা হলেও এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। সবকিছু মিলিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম।
ভুক্তভোগী রোগীর স্বজন সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা মো. আফছার আলী বলেন, ‘হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে না দেখেই ডাক্তাররা রেফার্ড করে দেয়। আমরা আমাদের প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি; যা দুঃখজনক। এর থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই।’
ব্যবসায়ী রনি রায় বলেন, ‘চিকিৎসা সেবার মান সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। হাসপাতাল এখন নিজেই রোগীতে পরিণত হয়েছে।’
চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) ডা. সবিজুর রহমান বলেন, ‘অননুমোদিত ভাবে চার জন চিকিৎসক বেশ কয়েক বছর ধরে অনুপস্থিত রয়েছে। তারা থাকলেও আমাদের চাপ কিছুটা কমতো। তবে সর্বোচ্চ চাপের মধ্যে থেকেও ভাল সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |
আইটি সাপোর্ট ও ম্যানেজমেন্টঃ Creators IT Bangladesh