পাবনার চাটমোহরে নিজের আপন বাবা ও সৎ ভাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন পাশবিক নির্যাতনের শিকার এক স্কুল ছাত্রী (১৪)। শনিবার (২৫ আগস্ট) রাতে নিজ বাবা আনু মন্ডল ও তার সৎ ভাই রিপন হোসেনকে আসামী করে থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন ধর্ষিতা ওই স্কুল ছাত্রী।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গুড় ব্যবসায়ী আনু মন্ডল তার প্রথম স্ত্রী থাকা সত্বেও দ্বিতীয় বিয়ে করেন উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার দক্ষিণপাড়া গ্রামে। এরপর তাদের সংসারে একে একে তিন কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয় স্ত্রী মারা যাওয়ার পর বড় দুই মেয়ের বিয়ে দেন এবং নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছোট মেয়েকে নিয়ে (নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রী) বালুদিয়ার গ্রামে শ্বশুড় বাড়ি এলাকায় বসবাস শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি একই উপজেলার পবাখালি গ্রামে প্রথমপক্ষের স্ত্রীর কাছেও যাতায়াত করতেন।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর আনু মন্ডল তার প্রথমপক্ষের স্ত্রী ও বড় ছেলে রিপন হোসেনকে সঙ্গে করে বালুদিয়ার গ্রামে জালসা শুনতে আসেন। রাতে তারা স্থানীয় একটি মাঠে জালসা শুনতে গেলে ওই স্কুল ছাত্রীকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষন করে তার সৎ ভাই রিপন হোসেন-মামলায় এমন অভিযোগ ওই ছাত্রীর।
জালসার পরের দিন আনু মন্ডল ও তার স্ত্রী পবাখালি গ্রামে ফিরে গেলেও রিপন হোসেন বালুদিয়ার গ্রামে থেকে যায়। পরপর কয়েকদিন তার সৎ বোনকে ধর্ষন করে রিপন। পরে বিষয়টি তার সৎ মা ফেরদোসি বেগমকে জানালে তিনি বলেন,‘ভাই বোন এরকম হয়। এই ঘটনার ব্যাপারে কাউকে কিছু বলার দরকার নেই।’ এর কিছুদিনের মধ্যে ধর্ষিতা ওই স্কুল ছাত্রী অন্তঃসত্ত¡া হয়ে পড়লে বিষয়টি তার বাবাকে জানায়।
পরে আনু মন্ডল অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে তার মামীর সঙ্গে ঢাকা পাঠিয়ে সেখানকার স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে গর্ভপাত করান। এ সময় তাদের হাতে নগদ ৫ হাজার টাকাও দেন তিনি। ঢাকা থেকে ফিরে আসার পর মেয়ের ওপর চোখ পড়ে বাবা আনু মন্ডলের। চলতি বছরের ২৮ জুন তিনিও তার মেয়েকে বেশ কয়েকবার পাশবিক নির্যাতন করে বলে অভিযোগ।
শুধু তাই নয়, ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন আনু মন্ডল। লোকলজ্জার ভয়ে পাশবিক নির্যাতনের ওই স্কুলছাত্রী কাউকে বলতে না পারলেও সম্প্রতি ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়। এমন ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ধর্ষিতা ওই স্কুলছাত্রী।
পরে শনিবার রাতে বাবা ও সৎ ভাইকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করে সে। মামলা নং-১২।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বকুল বলেন, ‘লোকলজ্জার ভয়ে মেয়েটি কাউকে ঘটনাটি বলতে পারেনি। অভিযুক্ত বাবা-ছেলে জঘন্য লোক। এদের কঠিনতর শাস্তি হওয়া উচিত।’
মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুদ্দোজা বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। বাবা ও সৎ ভাইকে আসামী করে ওই মেয়েটি থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে। ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে আসামীদের ধরতে পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম মাঠে কাজ করছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | |
৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ |
১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ |
২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ |
২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |
আইটি সাপোর্ট ও ম্যানেজমেন্টঃ Creators IT Bangladesh
ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টঃ WebNewsDesign